অবশেষে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ উচ্চারণ করে যা বললেন পোপ ফ্রান্সিস
মিয়ানমারে না বললেও বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। শুক্রবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্রথমবারের মতো ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
ঢাকায় শুক্রবার ১৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘এই রোহিঙ্গাদের মাঝেও আজ ঈশ্বরের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যারা আপনাদের অত্যাচার করেছে, কষ্ট দিয়েছে তাদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি। আপনারা বিশাল মনের পরিচয় দিয়ে আমাদের ক্ষমা করে দিন।’
প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সফরকালে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করতে পোপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কার্ডিনাল চার্লস মং বো। মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের আর্চবিশপের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছিল। এজন্য মিয়ানমার সফরের সময় তিনি রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি।
আদি জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয় স্বীকার করে না মিয়ানমার। তাদের নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন করতে ‘বাঙালি’ হিসেবে পরিচিত করতে চায় ইয়াঙ্গুন। রোহিঙ্গাদের পালিয়ে মিয়ানমারে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দেখাতে চায় দেশটি।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) নেপিদোতে পোপ তার মিয়ানমার সফরের মূল ভাষণ দেন। সেই ভাষণে সরাসরি রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি তিনি। বিবিসির এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে প্রতিবেদক জোনাথন ফিশার জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের ভাষণে রোহিঙ্গা শব্দটি বর্জন করে কট্টরপন্থী বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এবং অং সান সু চি’র অস্বস্তি ঠেকাতে পেরেছেন পোপ। চ্যানেল নিউজ এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে সামরিক বাহিনীর প্রভাবের কথা চিন্তা করে মিয়ানমারের কার্ডিনাল গণতন্ত্র বিপন্ন হওয়ার ভয় পেয়েছিলেন। এই বাস্তবতায় দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনতাকে উত্তেজিত করতে চাননি পোপ। এতে রোহিঙ্গাদের ওপর আরও বেশি করে নিপীড়ন নেমে আসার আশঙ্কা ছিল।
No comments